নারীদের প্রতি হুজুরে পাক (সা.)-এর নির্দেশ |

উম্মুল মু’মিনীন হযরত উম্মে সালমা (রা) বলেন, আমি এবং হযরত মায়মুনা (রা) হুজুরে পাকের সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকটে হাজির ছিলাম। ইত্যবসরে অন্ধ সাহাবী হযরত উম্মে মাকতুম (রা) হুজুরের খেদমতে হাজির হবার জন্য অনুমতি চাইলেন। হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের বললেন, তোমরা পর্দার আড়ালে চলে যাও। হযরত উম্মে সালমা (রা) বললেন, আমরা উনাকে চিনি, উনি যে অন্ধ মানুষ। একথা শোনার পরে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটু কড়াভাবে বললেন, তোমরা দু’জনও কি অন্ধ? তোমরা কি তাকে দেখছো না? (মিশকাত পৃঃ ২৬৯) নবীর পত্নীগণ উম্মতের মা। নিজের মাকে যেমন কোনো দিন বিবাহ করা যায় না, বরং হারাম। ঠিক নবীর উম্মত হয়ে নবীর পত্নীগণকে বিবাহ করা যায় না, বরং হারাম, আপন মায়ের মতো হারাম। তবে নবী কেন বললেন তোমরা দু’জনও কি অন্ধ? এই কথাটির ব্যাখ্যা একটু নিজে নিজে চিন্তা করুন। পাগল মনের কাছে জিজ্ঞেস করুন।

দেখবেন মন সব কিছু বিস্তারিতভাবে বলে দেবে। তা শুনলে আপনি অবাক হয়ে যাবেন। কারণ মন কুরআন, হাদিস, ওয়াজ-নছিহত, যুক্তি-পরামর্শ; হারাম-হালাল কিছুই মানতে চায় না। যেমন তেঁতুল দেখলেই জিহ্বায় পানি আসে, ঠিক যখন মন যা দেখবে, প্রথমে একটি ঝাঁকা দেবে, বিচার পরে। অনেকে এ ঝাঁকার আঘাতে পড়ে যায়, আবার কেউবা দাঁড়িয়ে থাকে। অনেক সময় যুবক- যুবতিদের স্বপ্নদোষ হয়, কিন্তু কার সাথে; কে কী করে, তা কি কাউকে বলা যায়। যা স্বপ্নে ঘটে তা অনেক সময় বাস্তবেও দেখা যায় বা ধরা পড়ে। যেমন স্বপ্নে ছোট ছোট ছেলে যার দাড়ি গোঁফ ওঠে নি; তার সাথেওউত্তেজনাবশত জিনা করে ফেলে। বাস্তবে দেখা যায় কুরআন পাকে তার প্রমাণ, হযরত লুত (আ)-এর কওমের লোকেরা নারীদের বাদ দিয়ে ছেলেদের সাথে জিনা করতে বেশি ভালোবাসত। আল্লাহর নবী ইরশাদ করেছেনঃ দেবর (স্বামীর ছোট ভাই) তো মওতের ন্যায়। (আল-হাদিস) নারীরা যাদের সাথে দেখা করতে পারবে, তাদের কথা আগেই বলেছি বিস্তারিত দেখে নেবেন।

এখন কথা হলো যাদের সাথে প্রকাশ্যে দেখা দেয়া যাবে না। ১। দেবর, স্বামীর যত প্রকার ছোট ভাই থাকুক না কেন বালেগ হলে পর্দা ছাড়া দেখা দেয়া যাবে না। ২। ভাশুর, স্বামীর যত প্রকার বড় ভাই থাকুক না কেন তাদের সাথে প্রকাশ্যে দেখা দেয়া যাবে না। ৩। নারীদের আপন ভাই (মা কিংবা বাপের পক্ষের বা দুধ ভাই) ছাড়া অপর কারো সাথে পর্দা ছাড়া প্রকাশ্যে দেখা করা যাবে না। সর্ব প্রকারের ভগ্নিপতি এদের সাথেও প্রকাশ্যে দেখা করা যাবে না। ৪। যে কোনো ধর্ম আত্মীয়, বাপ, ভাই, ছেলে, শ্বশুর ইত্যাদি পুরুষের সাথে সামনা-সামনি পর্দা ছাড়া দেখা সাক্ষাৎ করা যাবে না। ৫। পীর ছাহেব, ইমাম ছাহেব, মাস্টার (ক্লাসের হোক বা প্রাইভেট হোক সামনা-সামনি পর্দা ছাড়া পড়া যাবে না)। মোটকথা শরীয়তে যাদের সাথে বিবাহ হারাম, তাদের ছাড়া প্রকাশ্যে দেখা শুনা হারাম। পরহেজগারীর জন্যই হযরত আবু হানিফা (র)-এর ছাত্র ইমাম মোহাম্মাদ এবং ইমাম আবু ইউসুফ (র) দের, (দাড়ি না ওঠা পর্যন্ত) পর্দা করে পড়াতেন। শোনা গেছে হযরত মাওলানা আশরাফ আলি থানবী (র) এর কামরাতে (উপরের তলায়) কোনো হুজুর একটি ছোট নাবালেগ ছাত্রকে পাঠিয়েছিলেন। থানবী (র) তাকে দেখেই ধমকি দিয়ে নিচে নিয়ে গিয়ে রাগ করে বলেন, কেন তাকে আমার কামরাতে পাঠানো হলো। কথায় বলে পিছল কাদায় হাতীও পড়ে যেতে পারে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *