বান্দার কাছে আল্লাহর চাওয়া |

প্রিয় ভাই ও বোন! প্রকৃত জীবনের সূচনাতো হলো মৃত্যুর পর থেকে। আগামীতে যে দিনটি আসছে, অর্থাৎ মৃত্যুর পর। তার উপর মানুষের কোন দখল নেই। না এমনকি কেউ বলতে পারে যে, আগামী কালকের দিনটি সে পাবে? অথচ পৃথিবী আমার আসল ঠিকানা নয় ৪৯ মানুষ শুধু কালকের জন্যই নয়, পরবর্তী বহু বছরের পরিকল্পনা ঠিক করে নেয়। মহান রাব্বুল আলামীন আমাদের কাছে কামনা করেছেন, হে আমার বান্দারা। তোমরা আগামী দিনের জন্য তো চিন্তা করবেই এবং মৃত্যুর পর যে দিন আসবে তার জন্যও ভাবো। তবেই তোমাদের জীবনের ভারসাম্য আসবে। কত মানুষতো এমনও আছে, যে একটি সকাল দেখল, কিন্তু দুপুর কিংবা রাত দেখার ভাগ্য তার হয় না। কত মানুষতো এমন আছে যে, সূর্য উদিত হতে দেখে কিন্তু অস্ত যাওয়ার আগে নিজেই অস্তমিত হয়ে যায়। আগামী দিনতো পরের কথা। তারপরও মানুষের আগামীর পরিকল্পনা নিয়ে ব্যস্ততা এত বেশি যে, পরকালকে বেমালুম ভুলে যায়।

আল্লাহর নবী ও রাসূলগণ এ বিষয়টির উপর মেহনত করে গেছেন। যেন লোকেরা দুনিয়ার কথা ভাবে, দুনিয়াকে দেখে, কিন্তু এমনভাবে নয় যে, মৃত্যুর পরের জীবন ধ্বংস হয়। প্রকৃত জীবন তো সেটি, যেটি মৃত্যুর পর শুরু হবে। অনন্ত যে জীবন। যার শুরু আছে, শেষ নেই। এ জন্যই আমরা বলি যে, বের হোন। দ্বীনের পথে মানুষকে আহ্বান করুন। আর আগে নিজেরা ঈমানী যিন্দেগী কিভাবে গড়তে হয় শিখুন। ঈমানী যিন্দেগীর বিধি-বিধান, রীতি-নীতি শিখুন। আমরা তো মানুষ। জীব জন্তুতো নই। মানবিক গুণাবলী আমাদের শিখতে হবে। সুশৃংখল সুন্দর জীবন ধারণের জন্য মানুষের গুণগুলো অর্জন করতে হয়। এজন্য মহান রাব্বুল আলামীনের বিধানগুলো আমাদের মানা কর্তব্য।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনাদর্শ সমাজ গঠনে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট নমুনা। যদি আমরা এ থেকে বিচ্যুত হই তবে সমাজ ধ্বংস হয়ে যায়। সংসার ধ্বংস হয়ে যায়। আমাদের সন্তানদেরকে যদি দ্বীনী আদর্শ না শিখাই, তারা যদি মানবতা না শিখে, তবে ঘরে ঘরে আগুন জ্বলবে। ছেলে মেয়েদের এই দ্বীন ও মানবতা না শিখার কুফল তো আমরা ভোগ করছিই। দেখছেন না, আজ প্রতিটা ঘরে ছাই চাপা আগুন বিরাজ করছে। অশান্তির আগুনে সমাজ সংসারকে ফর্মা-৪ ৫০ পৃথিবী আমার আসল ঠিকানা নয় জ্বালিয়ে ছাই করে দিচ্ছে। কারণ, আমরা তো আমাদের সমাজ সংসারকে আল্লাহর রাসূলের সমাজ ব্যবস্থা সাজাইনি। আমরা শুধু বাড়ি-ঘর দেখে সহায় সম্পদ দেখে, ভাল চাকুরীজীবী দেখে বিবাহ সম্পন্ন করে ফেলেছি। এটা দেখিনি যে, ছেলেটা বা মেয়েটা মানুষ হয়েছে কিনা। মানুষ মানুষ হয় আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবন ব্যবস্থা অনুকরণ-অনুসরণ করার দ্বারা।

নামায পড়ছেন। রোযা রাখছেন। এগুলো এবাদত। অবশিষ্ট চব্বিশ ঘন্টা ইসলাম কি কিছু শেখায় না? ইসলাম চব্বিশ ঘন্টা পালন করার মত জীবন বিধানের নাম। ইসলাম শিখায় উত্তম চরিত্র কিভাবে গড়তে হয়। ইসলাম হালাল রুজি কামাই করতে শিখায়। ইসলাম হারাম বর্জন-শিখায়। সকল ক্ষেত্রে জীবন-ধারণের যোগ্যতা শিখায়। ইসলাম বিনয় শিখায়, নম্রতা শিখায়। ইসলাম স্নেহ মমতা শিখায়। ইসলাম হালাল উপার্জন করার পদ্ধতি শিখায়। হালালভাবে তা ব্যয় করার পদ্ধতি শিখায়। হালাল হারামের সীমারেখা ঠিক করে দেয়। এমন নয় যে, হালাল উপার্জন করা ফরজ, কিন্তু ব্যয় করার ক্ষেত্রে মানুষ স্বাধীন। ব্যয় করার ক্ষেত্রেও ইসলামের বিধান আছে যে, তোমার সম্পদ তুমি কোন ক্ষেত্রে ব্যয় করবে।

কোন খাতে ব্যয় করা যাবে না। আর এই না জানার কারণেই মানুষ জীবন যাপনের ক্ষেত্রে পড়ছে নানা রকম সমস্যায়। ঘরে সমস্যা। সমাজে সমস্যা। এই সমাস্যাগুলো এমনভাবে একটার পর একটা লেগে থাকে যে, মানুষ পেরেশান হয়ে যাচ্ছে। অথচ দ্বীন মানলে, দ্বীনের পথে চললে এসব সমস্যা মহান রাব্বুল আলামীন সহজ করে দিতেন। আজ মানুষ জানেনা, তাদের জীবনের এই সমস্যাগুলোর সমাধান কি? মানুষ মনে করে পয়সা কামাই করো তো সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। সংসারে সুখ আসবে। সমাজে শান্তি আসবে। বর্তমানে এটাই জগতের সকল মানুষের বুঝ। মুসলমানেরও এই বুঝ। ইহুদী খৃষ্টানের এই বুঝ। হিন্দুদেরও এই বুঝ। সবাই বলে টাকা আসবে তো আমরা সচ্ছল হয়ে যাবো এবং আমাদের সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *