জাহান্নামীদের সংখ্যা |

প্রিয় ভাই ও বোন! আল্লাহ পাক আমাদের ক্ষমা করুন। আমাদের অবস্থা যেন এমন না হয়। আমাদের আমলনামায় যদি এমন কোন অপরাধ দেখা যায়। যাকে আমরা তুচ্ছ ভেবেছিলাম। অথচ তা আল্লাহ তায়ালার নিকট বড় অপরাধ। তাহলে সেদিন আল্লাহ তায়ালা আমার প্রতি ক্রোধান্বিত হয়ে বলবেন, হে নাফরমান বান্দা! তোমার উপর আমার লানত। আমি তোমার কোন ইবাদতই কবুল করব না। এই ঘোষণা শোনার পর অপরাধীর চেহারা কালো হয়ে যাবে। অতঃপর আল্লাহ তায়ালাকে রাগান্বিত দেখে ৫৮ পৃথিবী আমার আসল ঠিকানা নয় ফেরেশতাগণও তোমার উপর ক্ষেপে যাবে এবং বলবে, তোমার উপর আমাদের লানত এবং সমগ্র মাখলুকের লানত।

ঠিক ঐ মুহূর্তে যাবানিয়া নামক আযাবের ফেরেশতারা তোমার দিকে অগ্রসর হবে। তারা তোমার প্রতি অত্যন্ত কঠোর আচরণ করবে। তাদের চেহারা এবং গঠনও হবে খুবই ভীতিপ্রদ। তারা তোমাকে উপুড় করে তোমার কপালের চুল ধরে হেচড়িয়ে হেচড়িয়ে টেনে নিয়ে যাবে। লোকেরা তোমার কালো কুশ্রী চেহারাও তোমার এ অপমান ও লাঞ্চনা দেখতে থাকবে। আর তুমি বলতে থাকবে হায় ধ্বংস, হায় আমার বরবাদী। তুমি চিৎকার করতে থাকবে। জবাবে ফেরেশতারা বলবে, আজ শুধু একটি ধ্বংসের আহ্বান করো না, বরং শত শত ধ্বংসের আহ্বান করো। তারা ঘোষণা করবে, যে এ ব্যক্তি অমুকের সন্তান অমুক। আল্লাহ পাক তাকে তার নাফরমানীর কারণে অপদস্ত করেছেন।

তার অপকর্মের কারণে তার উপর লানত বর্ষণ করেছেন। ফলে তার কপাল এমন পোড়াই পুড়েছে যে, কোনদিন আর এই কপাল জোড়া লাগবে না। ভাগ্যের এ বিড়ম্বনা থেকে তার কখনও মুক্তি নেই। হে ভাই ও বোন! বহু ক্ষেত্রে এ ধরনের পরিণতি ভোগ করতে হবে সে সব গুনাহের দরুণ, যা তুমি লোক চক্ষুর অন্তরালে নির্জনে করেছো। অথবা মানুষের মাঝে জনপ্রিয় হওয়ার জন্য এমন কাজ করেছো। যা ছিল ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক। অথবা লোকলজ্জার ভয়ে নিজেকে জড়িয়ে নিয়েছো কোন পাপাচারে। তুমি কি ভেবেছো! তুমি কত বড় মূর্খ? যে, তুমি ক্ষণস্থায়ী এই দুনিয়ার কিছু মানুষের অন্তরে জায়গা পাওয়ার জন্য আল্লাহর নাফরমানী করছো? অথচ কেয়ামতের ময়দানে বিশাল কাফেলার সামনে অপদস্ত হওয়ার কথা ভাবছ না।

সেখানে তো শুধু তোমাকে অপমানই হতে হবে না বরং আল্লাহ তায়ালার রোষানলে পড়তে হবে। ভীষণ যন্ত্রণাদায়ক আযাবের সম্মুখীন হতে হবে। অথচ তুমি ভয়হীন, বেপরোয়া। আল্লাহ পাক কোরআন কারীমে বলেছেন, وَإِنْ مِنْكُمْ إِلَّا وَارِدُهَا كَانَ عَلَى رَبِّكَ حَتْمًا مَّقْضِيًّا – ثُمَّ نُنَجِّي الَّذِينَ اتَّقَوْا وَنَذَرُ الظَّلِمِينَ فِيهَا جِثِيًّا পর য়া র পৃথিবী আমার আসল ঠিকানা নয় ৫৯ তোমাদের প্রত্যেকেরই জাহান্নাম অতিক্রম করতে হবে। এটি আল্লাহর অবধারিত সিদ্ধান্ত। অতঃপর আমি আল্লাহভীরুদেরকে নাজাত দিবো। আর জালিম পাপিষ্ঠদিগকে উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবো। সেরা মারইয়াম, ৭১, ৭২) এখানে সবাইকে জাহান্নাম অতিক্রম করানো হবে অর্থ হলো, হাশরের প্রাথমিক অবস্থায় মুমিন, কাফের, ভাগ্যবান, হতভাগা, সবাইকে জাহান্নামের চারদিকে সমবেত করা হবে। সবাই ভীত বিহ্বল নতজানু অবস্থায় পড়ে থাকবে। এরপর মুমিন ও ভাগ্যবানদেরকে জাহান্নাম অতিক্রম করিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে।

ফলে জাহান্নামের ভয়াবহ দৃশ্য দেখার পর তারা পুরোপুরি খুশি, ও ধর্মদ্রোহীদের দুঃখে আনন্দ এবং জান্নাত লাভের কারণে অধিকতর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে। যদিও মুমিন ও ভাগ্যবান ব্যক্তি জাহান্নাম অতিক্রম করার সময় জাহান্নামের একটু আঁচড়ও তাদের গায়ে পড়বে না। (সূত্র: তাফসীরে মা’আরেফুল কোরআন) তাহলে তোমার জাহান্নাম অতিক্রম চূড়ান্ত বিষয়, কিন্তু নাজাত পাওয়া নিশ্চিত নয়। তাই অন্তরের মাঝে সেই ভীতিপ্রদ ঘাটির দৃশ্যটা অনুভব করো। হয়ত তা তোমাকে নাজাতের প্রস্তুতি গ্রহণে উৎসাহিত করবে। চিন্তা করো হাশরের মাঠের সেই ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে মানুষের কি অবর্ণনীয় দুর্ভোগ হবে। তারা কেয়ামতের প্রকৃত খবরাখবর ও সুপারিশকারীদের সুপারিশের অপেক্ষায় থাকবে।

হঠাৎ করে ভয়াবহ রকমের অন্ধকার অপরাধীদের ঘিরে ফেলবে। জাহান্নামের লেলিহান আগুন তাদের উপর দিয়ে বিস্তৃত হবে। তারা জাহান্নামের বিকট-চিৎকার ও গর্জন শুনতে পাবে। সেই মুহূর্তে বিশ্বাস করবে যে, তারা দুর্ভাগা, তাদের ধ্বংস অবধারিত। এমনকি সৎ লোকেরাও অশুভ পরিণামের আশংকায় আতংকিত হয়ে পড়বে। এমন সময় একজন আযাবের ফেরেশতা ঘোষণা করবেন, অমুকের পুত্র অমুক কোথায়? দুনিয়ার জীবনকে অন্যায়ভাবে ধ্বংস করেছো। ফেরেশতারা লোহার হাতুড়ি নিয়ে তার দিকে ছুটে যাবে, কঠোর ধমক দিয়ে তাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাবে। অতঃপর কঠিন জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে এবং বলবে, য়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *