ফরিদপুরের গেরদা থেকে একটি সড়ক রেলপথ অতিক্রম করে মুন্সিবাজার এলাকায় মিসেছে। ওই সড়কে একটিই রেল ক্রসিং। কিন্তু এটি অনুমোদিত কোনো রেল ক্রসিং নয় বলে রেল বিভাগের কোনো তত্ত্বাবধান নেই, তাই সেখানে ছিল না কোনো গেটম্যান।
আরও এর মধ্যে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফরিদপুর সদরের গেরদা কাফুরা এলাকায় অবৈধ ওই রেল ক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের পাঁচ যাত্রী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন তিনজন।
নিহতরা হলেন: নারায়ণগঞ্জের ভূঁইয়াপাড়ার সায়েম (৪০), সাদিয়া জহির (৪৫), রানা শরিফ ভূঁইয়া (৬৭) ও রাইয়ান (১১)। তবে নিহত আরেকজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এলাকাবাসী জানান, ‘মধুমতী এক্সপ্রেস’ নামের ট্রেনটি রাজশাহী থেকে ফরিদপুর হয়ে ঢাকা যাচ্ছিল। অপরদিকে ওই মাইক্রোবাসটি গেরদা থেকে মুন্সিবাজারের দিক থেকে আসছিল। এ সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে যান। সেখান থেকে তিনটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে মাইক্রোবাসটি নিচের খাদে পড়ে যায়। সেটি উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ঘটনাস্থলে এসে তারা জানতে পেরেছেন আহতদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আতিয়ার রহমান বলেন, ‘হাসপাতালে দুজনকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। তারা দুজনই নারী। বাকিদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে মাইক্রোবাসের চালকও রয়েছেন।’
জানা যায়, নিহতরা সবাই নারায়ণগঞ্জ জেলার বাসিন্দা। তারা ফরিদপুরের সদরপুরে এক আত্মীয়র বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। আজ নারায়ণগঞ্জে ফেরার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই রেলক্রসিংয়ে কোনো গেটম্যান না থাকায় এখানে মাঝে মধ্যে ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। এমনকি ইতিপূর্বে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। আমরা দ্রুত রেল বিভাগের কাছে এই ক্রসিংয়ের জন্য গেটম্যান চাই।
তারা আরও জানান, প্রতিদিনই ট্রেন আসার আগে হুইসেল দেয়, কিন্তু আজ কোনো হুইসেলও দেয়া হয়নি। এ কারণে মাইক্রোবাসটি রেলসড়ক পার হতে গিয়ে এ দুর্ঘটনায় পড়ে।
ফরিদপুর রেলের স্টেশন মাস্টার তাকদির হোসেন বলেন, ‘গেরদায় রেল বিভাগের অনুমোদিত কোনো রেলক্রসিং নেই। তবে দুর্ঘটনার খবর তিনি শুনেছেন এবং এ ব্যাপারে খোঁজ নিচ্ছেন।’
এ বিষয়ে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্লা জানান, আমরা জানতে পেরেছি নিহতদের সবার বাড়ি নারায়ণগঞ্জ জেলায়। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতের মরদেহ বাড়িতে পৌঁছানো ও দাফন সম্পন্নের জন্য আর্থিক সহায়তা করা হবে।